থানায় ঢুকে প্রাণে বাঁচলেন বিজেপির পশ্চিমবঙ্গ সভাপতি

০২:৫৬ অপরাহ্ন, অক্টোবর ০৬, ২০১৭ / সর্বশেষ সংশোধিত: ০৩:০০ অপরাহ্ন, অক্টোবর ০৬, ২০১৭

দার্জিলিং-এ হামলার শিকার

থানায় ঢুকে প্রাণে বাঁচলেন বিজেপির পশ্চিমবঙ্গ সভাপতি


কলকাতা প্রতিনিধি
থানায় ঢুকে প্রাণ বাঁচালেন ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের বিজেপি সভাপতি দীলিপ ঘোষ। বৃহস্পতিবার (৬ অক্টোবর) বিকেলে দার্জিলিংয়ে একদল বিক্ষোভকারীর হামলার শিকার হন দীলিপসহ আরও কয়েকজন নেতা। রাস্তায় ফেলে লাঠি ও বাঁশ দিয়ে পেটানো হয় তাদের।
বিক্ষোভকারীরা কোন রাজনৈতিক দলের সমর্থক সেটি পরিষ্কার না হলেও আহত বিজেপি সভাপতি দীলিপ ঘোষ অভিযোগ করেছেন যে হামলার পেছনে তৃণমূল ঘনিষ্ঠ মোর্চার দ্বিখণ্ডিত অংশের নেতা বিনয় তমাঙ্গের অনুগামীরা রয়েছে।
বিজেপি সভাপতিকে মারধরের ঘটনায় পৃথক দুটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। দার্জিলিং জেলার পুলিশ সুপার অখিলেশ চতুর্বেদী জানিয়েছেন, হামলাকারীদের মধ্যে দুজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পুলিশ গোটা বিষয়টি তদন্ত করে দেখছে। রাজ্য বিজেপি সভাপতির সার্বিক নিরাপত্তায় পুলিশের কোন ত্রুটি নেই বলেও দাবি করেন ওই পুলিশ কর্মকর্তা।
এর আগে দীলিপ ঘোষসহ বিজেপির কয়েকজন নেতা কালিম্পংয়ে বিক্ষোভের মুখে পড়েন। সেখানে একদল বিক্ষোভকারী মুখে কালো কাপড় বেঁধে দীলিপ ঘোষের গাড়ির সামনে প্রতিরোধ গড়ে তোলে এবং “গো ব্যাক” স্লোগান দেয়। পুলিশ যদিও ওই প্রতিরোধ তুলে দিতে সমর্থ হয়।
বিজেপি নেতারা দার্জিলিং শহরে একটি রাজনৈতিক সম্মেলনে যোগ দিতে এলে সেখানেই তাঁদের ঘিরে ধরে একদল পাহাড়ি বিক্ষোভকারী। প্রথমে তাঁদের সঙ্গে বিক্ষোভকারীরা বচসায় জড়িয়ে পড়ে। এরপর, চড়াও হয়ে বেধড়ক মারধর করতে শুরু করে তারা। এক পর্যায়ের দীলিপ ঘোষ এগিয়ে প্রতিবাদ জানতে গেলে তাঁকেও মাটিতে ফেলে মারধর করা হয়। পরিস্থিতি বেগতিক বুঝে প্রাণ বাঁচাতে দৌড়ে কোন ক্রমে পাশে দার্জিলিং থানায় ঢুকে পড়েন তিনি।
এদিকে, এই ঘটনার প্রতিবাদে কলকাতায় বিক্ষোভ প্রতিবাদে সামিল হন হাজার হাজার বিজেপি কর্মী-সমর্থক। সেন্ট্রাল রোডের বিজেপির রাজ্য দফতরের সামনে অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখানোর সময় পুলিশের সঙ্গেও দফায় দফায় হাতাহাতি হয়। এই ঘটনায় বেশ কিছু সময় ব্যস্ততম সেন্ট্রাল এভিনিউয়ে যান চলাচল বন্ধ থাকে। যদিও রাতের দিকে পরিস্থিতি শান্ত করে পুলিশ।
গত ১২ জুন থেকে পৃথক রাজ্যের দাবিতে পশ্চিমবঙ্গের শৈল শহর দার্জিলিংয়ের লাগাতার বনধ পালিত হয়ে আসছিল। ২৭ সেপ্টেম্বর থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে সেখানে বনধ তুলে নেয় আন্দোলনকারী গোর্খা মুক্তি মোর্চা। এই অশান্ত পরিস্থিতির মধ্যেই বিজেপি রাজ্য সভাপতি দুদিনের রাজনৈতিক সফরে পার্বত্য অঞ্চলে যান।
দীলিপ ঘোষের ওপর হামলার ঘটনার প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে রাজ্য তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “দীলিপ ঘোষ কলকাতায় বসে বলেছিলেন পাহাড়ের তৃণমূল টাইট খাচ্ছে। এখন তাকে কে টাইট দিচ্ছে সেটি আগে পরিষ্কার হোক।”
যে দ্বিখণ্ডিত মোর্চা নেতা বিনয় তামঙ্গের অনুগামীদের বিরুদ্ধে এই হামলার অভিযোগ সেই নেতা বলেন, “পৃথক গোর্খাল্যান্ড ইস্যুতে বিজেপির পরিষ্কার কোনও মন্তব্য পাহাড়ের মানুষ পাননি। তাই সেই ক্ষোভেও হয়তো দীলিপ ঘোষের উপর এই হামলা হতে পারে।”
দীলিপ ঘোষের আক্রান্ত হওয়ার খবর পেয়ে বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ তাঁর সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেন এবং পরিস্থিতির খোঁজখবর নেন

Comments